বেসুরো বৈদ্যনাথ হঠাৎ সুরে ! কৌশল না অন্য কিছু উঠছে প্রশ্ন!!




মান অভিমানের পালা শেষ ! শুক্রবার সন্ধেতে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি বৈদনাথ দাসকে দেখা গেল জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সাংসদ আবু তাহের খানের সাথে একই ফ্রেমে। 



পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ফটো সেশনও করলেন বৈদ্যনাথ । আমি দলে আছি প্রমাণ করার জন্য যেমন বৈদ্যনাথের উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল তেমনি বৈদ্যনাথ দলের সাথে আছে সেটা মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর জেলা সফরের আগে প্রকাশ্যে দেখানোর তাগিদও ছিল আবু তাহের খানের বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। 



এক সপ্তাহ ধরে বৈদ্যনাথের শুভেন্দু অধিকারীর ফেসবুক পোস্টের উপর শুভেন্দু অধিকারী জিন্দাবাদ সহ একাধিক মন্তব্য নিয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের কোপের মুখে পড়েন। 



মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম থেকে আবু তাহের খান কার্যত বৈদ্যনাথের এই আচরণ নিয়ে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেন । তার ফলেই কি নরম হলেন বৈদ্যনাথ ? 



না কি এর পিছনেও রয়েছে কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি ? এ প্রশ্নও ঘুরে বেড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।
দিন কয়েক আগে সংবাদ শিরোনামে আসে বেসুরো বৈদ্যনাথ দাস! অস্বস্তি তৃনমূলে । 


এবার বেসুরো হলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস। শুভেন্দু অধিকারীর ফেসবুক প্রোফাইলে বৈদনাথ দাসের মন্তব্য ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। 


যেখানে দেখা যাচ্ছে বৈদ্যনাথ দাস কমেন্টে করেছেন ‘ভারত মাতাকি জিন্দাবাদ’, ‘শুভেন্দু অধিকারী জিন্দাবাদ ‘। এই পোস্ট তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের চোখে পড়তেই গত মঙ্গলবার বৈদনাথ দাসকে ডেকে পাঠানো হয়েছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে। ঘটনায় ক্ষুব্দ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। 



মুর্শিদাবাদ জেলা তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি আবু তাহের খান সাফ জানান, দলের অনুশাসন মেনে কাজ করতে চাইলে করবে, দলের বাইরে কাজ করলে দল দৃষ্টান্ত মূলক সিদ্ধান্ত নেবে। 


সেদিন বৈদনাথ দাস অবশ্য বলেছিলেন আবেগপ্রবন হয়েই এই মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে শুধু আবেগের বশেই নয় দলের নেতৃত্বের সাথে তার মনোমালিন্যও প্রকাশ পায় তার পরের বক্তব্যে । 



দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তিনি ।যদিও বেসুরো বৈদ্যনাথ দাসের এই আচরণে জেলা তৃনমূল নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ। জেলা তৃণমূল সভাপতি আবু তাহের খান এরপর সাফ জানান এসব স্রেফ অজুহাত।


বৈদ্যনাথ এলাকায় সরকারী কর্মসূচী রয়েছে এই অজুহাত দেখিয়ে মঙ্গল বা বুধবার জেলা নেতৃত্বের সাথে দেখা করেন নি। 





বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আবু তাহের খান বৈদ্যনাথ প্রসঙ্গে সরাসরি বলেন সহকারি সভাধিপতি যে একটা মনে হচ্ছে, ওর চিন্তাভাবনা ওর কাজ কর্ম ঠিক দলীয় চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করছে না। 


যেদিন থেকে শুভেন্দু অধিকারী দল ছেড়েছে তারপর থেকে ওর যে ভাবনা ওর যে চিন্তা, ওর চলা ফেরা সবটাই দলের বাইরে। 


বুঝতে পারছিনা এর মধ্যে কারণ টা কি আছে। আমরা দলীয় নেতৃত্বকে ওর চলাফেরা নিয়ে ওর কাজকর্ম নিয়ে জানিয়েছি এবং আমি গতকালকে ওদেরকে ডেকে ছিলাম গতকাল আসার কথা ছিল কিন্তু একটা টেলিফোন করে জানাল যে আমি আসতে পারছিনা, আজকে আসব। 



তারপরে তো কোন ফোন নেই। আজকেও তার দেখা নেই। আজ জেলা পরিষদে এসেছে দেখা করে নি। তার মানে বুঝতেই হবে ওর অন্যত্র অন্য চিন্তা ভাবনা কাজ করছে। দল আগামী দিনে নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আমরা আরও অবজার্ভ করছি। 




ওর চলাফেরার দিকে নজর রাখছি এবং তার বিরুদ্ধে যা যা করার দল নিশ্চয়ই করবে। বৈদ্যনাথ দাস কিভাবে কি খেলছে আমরা জানি, সুতরাং তার খেলা বন্ধ কিভাবে করতে হয় সেটাও আমরা জানি। সুতরাং ওকে একটু ছেড়ে দিয়েছি, খেলতে দিয়েছি, ঠিক সময়ে আমরা খেলা বন্ধ করে দেব। 



বৈদ্যনাথ দাস সামান্য একটা চুনোপুঁটি মুর্শিদাবাদ জেলার ক্ষেত্রে। সামান্য একটা ভোটার। সহকারি সভাধিপতি আমরা করেছি দল করেছে তাই আজকে অনেক বড় নেতা। 


কাল দল থেকে যখন বেড়িয়ে যাবে তার পেছনে একটা লোকও থাকবে না। বাড়ি থেকে বেরোতে পারবে না, এই বৈদ্যনাথ দাস। এটাও আপনাদের সামনে বলে রাখলাম। কিন্তু রাজ্যেই তো বড় বড় নেতা যারা বড় বড় দায়িত্ব নিয়ে সামলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই যাদের স্থান ছিল তারাও তো দলের সাথে এভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। করা যাবে কি। 


চিরদিন আছে এগুলো, থাকবে, এই নিয়েই আমাদের চলতে হবে।
বৈদ্যনাথ দাস প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বৃহস্পতিবার সামসেরগঞ্জের জনসভার পর বৈদনাথ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, দেখুন একটা অন্য দলের নেতা, তাকে কেউ যদি সম্বর্ধনা করেন, তাহলে নিশ্চিত ভাবে এটা দলের ডিসিপ্লিনে পরে। জেলা কমিটি সেটা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। 


তার কারণ হচ্ছে শুভেন্দু এখন বিজেপি দলে। সুতরাং তার সাথে যুক্ত হওয়া মানে নিজের দলে লড়াই করার যে স্পিরিট সেটা নষ্ট করা। তাই যারা এই কাজটা করেছেন তারা অন্যায় করেছেন।




রাজনৈতিক মহলের অনুমান বৈদনাথ চাপে পড়ে জেলা কার্যালয়ে এসে জেলা নেতৃত্বের সাথে দেখা করলেন। এটা দলে থাকার জন্য না কি দল বদলের আগে কিছুটা সময় কাটানো সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

Post a Comment

0 Comments