জেলা পরিষদ কার ? জেলাপরিষদে কোন্দল, থমকে উন্নয়ন !

এক দল, পক্ষ দুই। তৃনমূল কংগ্রেসের দুই পক্ষের দড়ি-টানাটানি অব্যাহত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ ঘিরে । জেলা পরিষদ কার ? উঠছে প্রশ্ন। সদস্যের সংখ্যা গুনিয়ে বহুমত জাহির করছেন আবু তাহের খান, মোশারফ হোসেন মধু। 

শুভেন্দু অধিকারীর জেলা সফরের পর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শুভেন্দু ঘনিষ্ট সভাধিপতির নিরাপত্তাও । রাজ্যপালের টুইট থেকে অধীর চৌধুরীর অফার ; একের পর এক হাই প্রোফাইল মন্তব্যে বেড়েছে উত্তেজনা । 

তৃনমূল আছেন না নেই সভাধিপতি ? ঘন্টায় ঘন্টায় খোঁজ তৃনমূল কংগ্রেস মহলে । এর মাঝেই তৃনমূল কংগ্রেসের দলীয় কোন্দলে জেলা পরিষদের উন্নয়ন থমকে আছে বলে তোপ দাগলেন বিরোধীরা।
২০১৬ সালে জেলা কংগ্রেসের দল ভাঙিয়ে জেলা পরিষদ দখল করেছিল তৃনমূল কংগ্রেস। 

জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস এদিন অভিযোগ করেন , মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়ে কোঁদল আরম্ভ হয়েছে। জয়ন্ত দাসের মন্তব্য, ‘ অনুগামী আর বিপদগামী দুইয়ের লড়াইয়ের মাঝখানে পরে জেলাবাসীর অবস্থা ঠাণ্ডা’ ।



দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব , মান অভিমান- এসবের মাঝে জেলা পরিষদের ভবিষ্যৎ কোন পথে ? প্রশ্নের উত্তরে সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরীর বক্তব্য, ‘দুর্নীতির টাকা ভাগাভাগি নিয়েই তৃণমূলের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব, যার ফলে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে’।

একধাপ এগিয়ে জেলাপরিষদের বোর্ডই ভেঙে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন বিজেপি দক্ষিন মুর্শিদাবাদ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি গৌরীশংকর ঘোষ । গোরীশংকর বলেন, ‘জেলা পরিষদের টালমাটাল অবস্থা চলছে । উন্নয়ন থমকে গেছে। তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে এমনটা হচ্ছে। 

ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। অবিলম্বে জেলা পরিষদের বোর্ড ভেঙে দেওয়া উচিৎ’।
তবে বিরোধীদের কটাক্ষের প্রত্যুত্তরে জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অশোক দাসের জবাব, ‘অকারণে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই , আমরা সামলে নেব । কিন্তু অশোক দাসের কোথায় সায় দিতে চাইছেন না অনেক তৃনমূলের নেতারাই । তৃণমূল কংগ্রেসের এক অংশের কথায়, পরিস্থিতি আরো জটিল হবে আগামী দিনে।




জেলাপরিষদ কার্যত আড়াআড়ি দুই ভাগে বিভক্ত । জেলায় মোশারফ হোসেন মধু বনাম আবু তাহেরর পুরোনো সংঘাতকে ইন্ধন জুগিয়েছে দলে শুভেন্দুর বিদ্রোহ । পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর জেলা পরিষদ গঠনের সময় বেশ কয়েকজন কর্মাধক্ষ্য সভাধিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন , দিন কয়েকের টানাপোড়েনে তাদের পুরোনো ইচ্ছাও আবার সামনে চলে এসেছে। 

তারাও সভাধিপতি হওয়ার খোয়াব দেখতে শুরু করেছেন। জেলা তৃনমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের কেউকেউ জেলাপরিষদের ‘মেন্টার’ হয়ে বকলমে জেলা পরিষদ পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে ইচ্ছাপ্রকাশও করেছেন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। কার্যত, জেলা পরিষদের পরিচালকদের ক্ষমতাহীন করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে প্রশাসনিক স্তরে। 

ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে বদলির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলাপরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা শাসককে।
গোষ্ঠীকোন্দলের গুঁতো তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত জেলা পরিষদ কতটা ‘সামলায়’ সেই দিকেই নজর জেলাবাসীর । 

কার দিকে পাল্লা ভারি, জল মাপতে ব্যস্ত দুই পক্ষই। ‘উন্নয়ন তলিয়ে গিয়েছে জলের তলায় , তুলে আনতে দেরি হবে’, টীপ্পনি জেলা তৃণমূলের এক পোড় খাওয়া নেতার।

Post a Comment

0 Comments