শুভেন্দু অধিকারী আয়োজিত প্রণবের স্মরণসভায় উপেক্ষিত তৃণমূল মমতা





কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাকে শ্রদ্ধা জানাতে তমলুকের নিমতৌরি অঞ্চলে সভা করলেন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। যাকে নিয়ে বহুদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল বাংলার রাজনীতিতে। চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারের সভা সেই গুঞ্জনকেই আরও বাড়িয়ে দিয়ে গেল খানিকটা। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।



তৃণমূলের টিকিটেই ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিতে প্রথম সাংসদ হন শুভেন্দু। নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে তৃণমূল লড়েছিল। তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দুর জন্য তমলুকে সভা করতে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতাদের অন্যতম প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর সমর্থনে প্রণববাবুর সেই সভার কথা এ দিন বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেছেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী।



২০০৯ সালে এই তমলুক লোকসভা আসন থেকেই সিপিএমের তৎকালীন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু। ‘তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি’ আয়োজিত ওই সভা-মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু সেই জয়কে স্মরণ করে জানিয়েছেন, তাঁর সেই জয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের খুব বড় ভূমিকা ছিল।



তাঁর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি বলেন ‘‘২০০৯ সালে আমি যখন লোকসভায় এখানে লড়াই করছি, তিনি (প্রণববাবু) পুরুলিয়া থেকে হেলিকপ্টারে এসেছিলেন মহিষাদলে। আমার কাঁধে হাতটি রেখে মহিষাদলের মানুষের কাছে বলে গিয়েছিলেন, আমি তোমাদের এটুকু বলতে এসেছি, আমার উত্থান সতীশদা (সতীশ সামন্ত), সুশীলদার (সুশীল ধাড়া) হাত ধরে। আমি শুভেন্দুকে দিয়ে গেলাম তমলুকের মানুষের কাছে। শুভেন্দুকে তোমরা জেতাও, শুভেন্দু তোমাদের সঙ্গে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।’’



তৃণমূল তৈরি হওয়ার আগে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির মেম্বার করে দিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সেই সময় অবশ্য তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি। সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। দুবদা বেসিন এলাকায় প্রতি বছর ভয়াবহ বন্যার মোকাবিলায় কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পে যে অর্থ বরাদ্দ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণববাবু করেছিলেন, তাতেও তাঁর ভূমিকা ছিল বলে শুভেন্দু বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি ঘোষণা করলেন এবং আমার পিতৃদেব (শিশির অধিকারী) ও আমার দিকে তাকিয়ে বললেন— তোদের এলাকার জন্য এটা দিয়ে গেলাম।’’


গত কয়েক মাস ধরে জল্পনা চলছিল নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর দলে থাকা নিয়ে। এদিন সেই জল্পনা আরও বাড়ে এই অরাজনৈতিক সভার মধ্যে দিয়ে। ‘তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি’র সভাপতি হিসেবে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। সভাস্থল তেরঙায় মোড়া থাকলেও কোথাও তৃণমূলের নাম বা প্রতীক ছিল না। দীর্ঘ কয়েক মিনিটের ভাষণে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণা করলেও একবারও মুখে আনেননি তাঁর বর্তমান দল ও নেত্রীর নাম। যা বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।




Post a Comment

0 Comments