শোকে পাথর বিএসএফ শহিদের পরিবার, দীপাবলিতে নিভেছে প্রদীপ

দীপাবলির আলোয় চারিদিক যখন ঝলমল করছে, তখন নদীয়ার তেহট্টের রঘুনাথপুরে নেমে এসেছে অন্ধকার। 

শ্রক্রবার দেশরাক্ষার কাজে কর্তব্যরত অবস্থায় পাকিস্থানের সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন গ্রামের যুবক সুবোধ ঘোষ।
পরিবারের একমাত্র ছেলে, সে আজ আর নেই, কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছেনা কেউ। 

শহীদ জওয়ানের পরিবার আজ শোকে পাথর। দীপাবলির আগে শুক্রবার জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত বনাম পাকিস্তানের সেনার মধ্যে চরম যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়! 

আর তাতেই সেনাবাহিনীর এক ক্যাপ্টেন, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) এক সাব-ইন্সপেক্টর অফিসার সহ ভারতের পাঁচ নিরাপত্তারক্ষী এবং ছ’জন নিরীহ গ্রামবাসী পাকিস্তানের গুলিবর্ষণে প্রাণ হারান। নিহত জওয়ানদের মধ্যে রয়েছেন নদীয়ার সুবোধ ঘোষ।


রঘুনাথপুরে অত্যন্ত সাধারন ঘরের ছেলে সুবোধ,শ্রমিকের করতেন বাবা। কষ্ট করে এক ছেলে এক মেয়েকে বড় করেন। 

বছর চারেক আগে চাকরি পেয়েছিলেন সুবোধ। সিয়াচেন থেকে পাঞ্জাব, তারপর জম্মু কাশ্মীরে পোস্টিং হয়েছিল সুবোধ ঘোষের। 

এক বছর আগে বিয়েও হয়। তিন মাস আগে বাবা হন সুবোধ। 
খবর পাওয়ার পর থেকেই শহীদ জওয়ানের বাড়িতে ছিল গ্রামবাসীদের ঢল। 

ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় চোখের জল শুকিয়েছে শহীদের মায়ের।
এক মাত্র ছেলেকে শেষ বারের মতো দেখার অপেক্ষায় বাবা। কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেন। 
জীবনের সম্বলটুকু আজ হারিয়ে, ছেলের মুখটা দেখতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে তার।
ফুটফুটে একরত্তির শিশুকে কোলে অবাক স্ত্রী । 
কী হয়ে গেল- কেনই বা হল- উত্তর জানা নেই। 

শুধুই অপেক্ষা শেষ বারের মতো দেখার।
রঘুনাথপুরের বীর পুত্রের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছে না এলাকার মানুষজন। 
হচ্ছে না কোন কালী পুজো, শুনশান চারিদিক। সব মণ্ডপ ফাঁকা। গ্রাম জুড়ে এক নিস্তব্ধতা। স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা এলাকা। 

দেশের জন্য প্রাণ বলি দেওয়া শহিদ অমর থাকবে। বলছেন, স্থানীয়রা।
কবে সুবোধ ঘোষের নিথর দেহ ফিরবে, অপেক্ষা গ্রাম জুড়ে। কফিন বন্দী দেহে শুধু মুখ টুকু শেষ বার দেখতে চাইছে পরিবার।

Post a Comment

0 Comments